শ্রীশ্র্রীমনসাদেবীর পাঁচালী ও ব্র্র্রতকথা

শ্রীশ্র্রীমনসাদেবীর পাঁচালী ও ব্র্র্রতকথা


ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে, কশ্যপ মুনি ব্রহ্মার উপদেশে সর্পমন্ত্র সমূহের সৃষ্টি করে তপোবলে মন দ্বারা তাঁকে মন্ত্রের অধিষ্ঠাত্রী দেবীরূপে সৃষ্টি করেন— তাই তিনি মনসা।
পশ্চিমবঙ্গের ও বাংলাদেশের গ্রামে গ্রামে সারা শ্রাবণ মাস জুড়ে মনসার পুজো হয়। পুজো উপলক্ষে হয় পালা গান ‘সয়লা’। এই পালার বিষয় হল— পদ্মপুরাণ বা মনসা মঙ্গল। সারা রাত ধরে গায়ক দোয়ারপি-সহ পালা আকারে ‘সয়লা’ গান গায়।
মনসা হলেন জরুৎকারু মুনির পত্নী, আস্তিক মুনির মাতা এবং বাসুকির ভগ্নী। মনসা মঙ্গলে রয়েছে, চাঁদ সদাগর তাঁর গৃহিণী সনকার স্থাপিত ঘট পদাঘাতে ভেঙে দেন। পরে পুজো করেন। অষ্ট অঙ্গ সম্পন্ন পরিপূর্ণ একটি মানবীরূপে দেবী মনসার রূপলাভ ঘটেছে অনেক পরে।
শ্রাবণ মাসে আমাদের রাজ্যে যে মনসা মূর্তিতে পুজো করা হয় তা তাঁর মানবীমূর্তি নয়। তা পাঁচ বা সাতটি সাপের মুণ্ডের সমাহার। মনসাবৃক্ষেও পুজো প্রচলিত রয়েছে। সাপের রূপের পুজো উপাসনাও চলে কোথাও কোথাও। সাপ এখানে দেবী মনসার বাহন নয়, নিজেই দেবতা। মনসা উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গে ব্যাপক ভাবে পূজিতা দেবী। উত্তরবঙ্গে বাড়িতে যে কোনও শুভ অনুষ্ঠানে বিষহরির বন্দনা চাই। রাঢ় অঞ্চলে মনসা পুজোয় হয় ‘ঝাপান’ অনুষ্ঠান। মল্ল রাজধানী বিষ্ণুপুরে ‘মনসার ঝাপান’ বিখ্যাত। শ্রাবণ মাসের নাগ পঞ্চমী তিথি, শ্রাবণ সংক্রান্তি ও অন্যান্য দিনে হয় মনসার পুজো। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের মতে মনসা পুজো করলে মেলে পাঁচটি অলৌকিক ফল—
১. মনসা পুজো করলে বাস্তুদোষ দূর হয়।
২. পারিবারিক অশান্তির বিনাশ হয়।
৩. বন্ধ্যা নারীও সন্তানবতী হতে পারে।
৪. বাড়ির সবাই সুস্থ থাকে।
৫. সারা বছর আর সর্পভীতি থাকে না।


**জরৎকারু, জগৎগৌরী, মনসা, সিদ্ধযোগিনী, বৈষ্ণবী, নাগভগিনী, শৈবী, নাগেশ্বরী, জরৎকারুপ্রিয়া, আস্তীকমাতা, বিষহরী ও মহাজ্ঞানযুতা- এই দ্বাদশ নামে দেবীর কোন রূপের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, বলুন তো? একদম ঠিক, এই বারোটি নাম স্বয়ং দেবী মনসার। স্তোত্রে বলা হয়েছে-


জরৎকারুজগদগৌরী মনসা সিদ্ধযোগিনী।
বৈষ্ণবী নাগভগিনী শৈবী নাগেশ্বরী তথা।।
জরৎকারুপ্রিয়াস্তীকমাতা বিষহরীতি চ।
মহাজ্ঞানযুতা চৈব সা দেবী বিশ্বপূজিতা।।
দ্বাদশৈতানি নামানি পূজাকালে চ জঃ পঠেৎ।
তস্য নাগভয়ং নাস্তি তস্য বংশোদ্ভবস্য চ।।


দেবী মনসা এই বারোটি নামে সমগ্র বিশ্বে পূজিতা। পূজাকালে এই বারোটি নাম স্মরণ করলে স্মরণকারী নিজে বা তাঁর বংশের সকলে সর্পভয় থেকে মুক্ত থাকে।


ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ, দেবীভাগবতপুরাণ, মহাভারত, প্রভৃতি গ্রন্থে মনসাদেবীর লীলা ও মাহাত্ম্যকাহিনী বর্ণিত হয়েছে। যেসকল কবি বাংলা ভাষায় মনসার চরিতকথা লিখেছেন, তন্মধ্যে কাণাহরি দত্ত, কেতকা দাস, ক্ষেমানন্দ, নারায়ণ দত্ত, বিজয়গুপ্ত, প্রভৃতির নাম উল্লেখযোগ্য। এঁদের লিখিত পদ্মপুরাণ বা মনসামঙ্গলে দেবীর যে চরিত্র চিত্রণ করা হয়েছে, তা স্বভাবতই আমাদের মনে ভয় ও বিস্ময়ের উদ্রেক করে। চাঁদ সদাগরের দ্বারা পূজালাভ করার বাসনায় তাঁর জীবনে একের পর এক ঝরঝঞ্ঝা বয়ে নিয়ে এল মনসা। বণিকপুত্র কন্দর্পতুল্য লখিন্দরের প্রাণ সর্পাঘাতে হরণ করতেও পেছপা হলেন না দেবী। মানবসমাজে প্রতিষ্ঠা ও দেবসমাজে স্বীকৃতি পাবার আশায় এক দেবী ও এক মনুষ্যের মধ্যে যে অহংকারপ্রসূত যুদ্ধ, তাই নিয়েই মনসামঙ্গল কাব্য রচিত। পৃথিবীতে আপন পূজা প্রচলিত করবার মানসে স্বয়ং শিবকন্যা মনসার এ হেন মনুষ্যোচিত কার্যকলাপ সহজেই মনে প্রশ্ন জাগায়, তিনি কি সত্যই কোন দেবী, নাকি সাধারণ মানবী!


মনসার উৎপত্তি বিষয়ে অনেক কাহিনী পাওয়া যায়। শোনা যায়, সর্পদংশনের ভয় থেকে মনুষ্যদের পরিত্রাণ করার জন্য প্রজাপতি ব্রহ্মা কশ্যপমুনিকে একটি মন্ত্র বা বিদ্যবিশেষ আবিষ্কার করার আদেশ দেন। ব্রহ্মার আদেশ পেয়ে কশ্যপ যখন মনে মনে এই বিষয়ে চিন্তা করছিলেন, তখন তাঁর মননক্রিয়া থেকে আবির্ভূতা হন এক স্বর্ণবর্ণা মহাদেবী। যেহেতু তিনি মানসজাতা, মন থেকে তাঁর জন্ম, তাই তিনি “মনসা”। ইনি “কামরূপা” অর্থাৎ ইচ্ছানুযায়ী রূপধারণ ও রূপপরিবর্তন করতে সক্ষম। দেবীমহাভাগবতে একই কথার পুনরাবৃত্তি হয়েছে-
সা চ কন্যা ভগবতী কাশ্যপস্য চ মানসী।
তেনৈব মনসা দেবী মনসা বা চ দীব্যতি।।
শিব মনসার পিতা, শিবের আরাধনা করে তিনি দিব্যজ্ঞানলাভ ও সামবেদ অধিগত করেছিলেন। তাই দেবীর নাম “শৈবী”। আবার শিবের অনুকম্পায় অণিমা, লঘিমাদি অষ্টসিদ্ধিরা মনসার শরীরে প্রবেশ করে তাঁকে “সিদ্ধযোগিনী” রূপে রূপান্তরিত করেন। পুনশ্চ, শিব তাঁর গুরুও বটে। শিবের নিকট হতেই তিনি “শ্রীং হ্রীং ক্লীং শ্রীকৃষ্ণায় স্বাহা” এই আট অক্ষরযুক্ত বৈষ্ণবমন্ত্র প্রাপ্ত হয়ে পুষ্করতীর্থে গিয়ে তিনযুগব্যাপী ভক্তিমার্গ অবলম্বন করে শ্রীভগবানের আরাধনা করেছিলেন। তাই দেবীর এক নাম “বৈষ্ণবী”। দেবীভাগবত হতে এও জানা যায়, সাধনায় তুষ্ট হয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং সর্বাগ্রে মনসার পূজা করে তাঁকে “সর্বলোকপূজ্যা” হওয়ার বর দান করেছিলেন। শ্রীকৃষ্ণের পর মহর্ষি কশ্যপ তাঁর পূজা করেন, তৎপরে মুনি, নাগ, গন্ধর্ব ও মানবগণ একে একে তাঁর পূজায় ব্রতী হয়।


অনেক নামের মধ্যে দেবীর এক নাম “বিষহরী”। সর্পবিষ হরণ করার অদ্বিতীয় কৌশল দেবীর জানা আছে বলেই এই নাম। মনসাপূজো সাধারণত শ্রাবণ সংক্রান্তি বা আষাঢ়ী পঞ্চমীতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে, দেশে যখন প্রবল বর্ষাকালের সময়। এই সময়েই সাপ ও বিষাক্ত কীটের আধিক্য দেখা দেয় দুর্বার গতিতে। সুদূর অতীতে, যখন চিকিৎসাশাস্ত্র এত উন্নত হয়নি, তখন সর্পদংশনের চিকিৎসা হত মন্ত্র, ওষধি, ক্রিয়া ও দৈব- এই চার প্রকারে।এই চারটে পদ্ধতিই ছিল মনসাদেবীর কৃপার ওপর নির্ভরশীল। সেই কারণেই সর্পদ্বারা ঘটিত মৃত্যু বা সর্পদংশন এড়াতে সর্পদেবী মনসার পূজার প্রচলন। আবার কোথাও কোথাও দেবীর পরিবর্তে দেবীর প্রতীক হিসেবে অনন্ত, বাসুকি, পদ্ম, মহাপদ্ম, তক্ষক, কুলীর, কর্কট, শঙ্খ- এই অষ্টনাগও পূজিত হন।


বন্দনা


সিদ্ধিদাতা গণেশের বন্দিয়া চরণ।
বন্দিলাম সর্র্ব দেব-দেবীর চরণ্॥
শ্রীগুরু চরণ বন্দি আর পিতা-মাতা।
লিখিলাম এই মনসা ব্রতকথা॥
ও দেবীমম্বামহীনাং শশধরবদনাং
চাারুকানি বদান্যম্।
হংসারূূঢ় মুদারাং সুুপণিত বসনাং
সেবিতাং সিদ্ধিকামৈঃ।
সেরাসস্ম্যং মন্ডিতাঙ্গীয়
কনকমণিগণৈনগি রতৈররনেকৈ।
বন্দেহহং সাষ্টনাগামুরকুচ
যুগলাং ভাগিনীং কামরূপম॥
মনসার প্রণাম
আস্তিকস্য মুর্নেমাতা ভগিনী
বাসুকিস্তাথা।
জগৎকারু মুনেঃ পত্নী মনসাদেবী
নমোহস্তুতে॥

 

মঙ্গলাচরণ


বন্দ কলিযুগ সর্বযুগসার বন্দ শ্রীগৌরাঙ্গ
অবতার
হরিনাম সংকীর্র্তনে যে ভরে
ত্রিভূবনেরে।
রাধাকৃষ্ঞ পাদপদ্ম ভূমিতে পড়িয়া বন্দ।
যাতে হবে অভীষ্ট পূরণ॥
সীতা, সীতাপতি রাম জপ মন অবিরাম
চিত্ত তাতে হবে পরামনন্দ।
শঙ্কর-শঙ্করী পায় ভূমিতে লোটায়ে কায়।
বন্দি হবে মন সুশীতল॥
হর-গৌরী প্রিয়াত্মজ গণপতি পদ ভজ
সর্ব্ববিঘ্ন হইবে বিনাশ।
সর্ব্ববিদ্যা অধিষ্ঠাত্রী বন্দ মাতা
সরস্বতী
যার ফলে কবিত্ব সুন্দর॥
দেব-দ্বিজ সাধ ুচরণ সকল আপদ হরণ
ভক্তি করি করিনু বন্দন।
রচিয়া পাঁচালি খান আনন্দেতে করি গান
দীন-হীন সেবক ব্রহ্মণ॥



মা মনসার পূূজা প্রচলন

একদা কৈলাস মাঝারে দেবী হৈমবতী।
করযোড়ে বলিলেন শঙ্করের প্রতি॥
তুমি দেব মহাদেব সর্ব্ব দেবোপর।
তোমার সৃজিত এই বিশ^ চরাচর॥
সর্পজাতি তুমি প্রভুু করিলে সৃজন।
অসংখ্য প্রকার তারা কে করে গনন॥
কোন কোন জাতি হয় এত বিষধর।
দংশনে তখনি জীব যায় যম ঘর॥
কোন কোন সর্র্প হয় এরূূূপ ভীষণ।
স্পর্শমাত্র জীব যায় শমন ভবন॥
এত সুু-বৃহৎ দেহ কেহ কেহ ধরে।
সর্ব্বাঙ্গেতে জীবগণে উদরস্থ করে॥
এই সব সর্পভয়ে ভীত জীবগণ।
জীবন থাকিতে যায় কখন জীবন॥
কেহবা তোমরা পূূজা করিতে বসিয়া।
সর্র্প দেখি পূজা ছাড়ি যায় পলাইয়া॥
জীবের এসব ভয় যাতে দূরে যায়।
কৃপা করি বল নাথ তাহার উপায়॥
হাসিয়া শঙ্কর বলে শুনি তব কথা।
কৌতুহল মনে মোর জাগিতেছে সদা॥
তব প্রাণাধিক কন্যা মনসা সুন্দরী।
তাহার মহিমা তুমি জান ভাল করি॥
তাহারে পূজিলে দূূরর হয় সর্র্পভয়।
ভব ভয় পর্য্যন্তও হয়ে যায় ক্ষয়॥
শিবের এহেন বাক্য করিয়া শ্রবণ।
মহেশ^রী বারখুড়ি বলিল তখন॥
শুক মুখোচ্ছিষ্ট অধিক মধুুর।
ঘনীভূূূত ক্ষীরে যেন মিশিলে কর্পূর॥
সেইরুপ বাক্য তব মুখ বিনিঃসৃত।
সু-মধুুর হয় অতি হইতে অমৃত॥
পার্ব্বতীর বাক্যে শিব বলেন তখন।
তোমারই জ্ঞাত লীলা করহ শ্রবণ॥

 


মনসাদেবীর স্তুতি

নমস্তে মনসা দেবী গৌরিকান্ত
প্রিয়াত্মজে।
পদ্মবন সমদ্ভুতে সর্ব্বজীব শুভপ্রদে॥
আশীভয় (বিষভয়) সন্ত্রস্তানাং জীবানাং
ত্রানকারিনি।
প্রণমি পদ্মম্বুজে দেবী লিখিল
তাপনাশিনী॥


ত্রিপদী


বন্দ দেবী মহাময়া জরৎকারু মুনি জায়া
(পত্নী)
সুরা সুর নরের জননী॥
ত্রি-লোকের ধাত্রীমাতা সব্বজীব
পালয়িতা।
সৃষ্টি-স্থিতি- প্রলয় কারিণী॥
শঙ্করের প্রিয়াত্মাজা সর্ব্বস্থানে তব
পূজা।
মহাদেবী মনসা সুন্দরী॥
পাপ-তাপ শোকহারা মুগ্ধ কর বসুন্ধরা।
সর্বলোকে দয়া দান করি॥
চারু কান্তি শুভাননা অঙ্গে আভরণ নানা।
অঙ্গদ বলিয়া আদি করি॥
মুখে মৃদু মন্দ হাসি অতীব মধুর ভাসে।
উপবিষ্টা ফনীর উপরি॥
স্বর্গ-মর্ত্ত্য রসাতলে আগমণ পূরাণে বলে।
কৃপাময়ী জগতের জ্যোতি॥
এক ভাবে এক মনে তোমা পূজে যেই জনে।
বল তার কিসের দূর্গতি॥
কৃপা কর যার প্রতি তুমি মাগো ভগোবতী।
মনে জানি দুঃখ কর নাশ॥
নিজ গুণে কৃপা করি ভব কন্যা রূপ ধরি।
মর্ত্ত্যে মাগো তোমার প্রকাশ॥
আমি অতি দুরাচর কিসে হব ভবপার।
তাই ভাবি চিত্তে অনুক্ষণ॥
সুগম করহ পথ কৃপা করি দাও বর।
যাতে হয় অভিষ্ট পূরাণ॥


মা মনসার জন্ম কথা

একদিন সাজি হাতে দেব পঞ্চানন।
পুস্প লাগি পদ্মবনে করেন গমন॥
আগে গিয়া হৈমবতী মায়া রূপ ধরি।
সৃজিলেন পদ্মবনে নদী আর তরী॥
আপনি পাটনী হয়ে বসে তরীপর।
হেনকালে সাজি হাতে আসেন শঙ্কর॥
রূপবতী নারী হেরি তরণী উপর।
মুগ্ধ হয়ে সকাতরে বলিল শঙ্কর॥
কেবা তুমি আলো করি আছ পদ্মবন।
বাসনা পুরাও মোর দিয়া আলিঙ্গন॥
এত বলি আগে বাড়ি চলিল ধরিতে।
অর্ন্তহিতা হয় দেবী দেখিতে দেখিতে॥
লজ্জিত হইয়া শিব আনত বদন।
শুন্যোপরি পাখী শব্দ করিল শ্রবণ॥
উর্দ্ধে চেয়ে দেখে সেই চকোর চকোরী।
মনের হরষে কেলি করে শুন্যোপরি॥
তাহা দেখি কামবশ হয় পঞ্চানন।
তাহার বীর্য পদ্মপত্রে হইল পতন॥
পাতাল ভেদিয়া বীর্য্য রসাতলে যায়।
বাসুকী পাইয়া রক্ষা করিলেন তায়॥
শিববীর্য্যে মনসা দেবী লভিলা জনম।
দিনে দিনে বাড়ে কন্যা শশীকলা সম॥
একদা মনসা দেবী বাসুকীরে কয়।
কাহার নন্দিনী আমি দেও পরিচয়॥
তখন সকল কথা বাসুকী বলিল।
শিবেরে দেখাতে সঙ্গে লইয়া চলিল॥
পদ্মবনে মনসারে করিল স্থাপন॥
দেখিতে দেখিতে তথা আসে পঞ্চানন॥
দিব্য নারী দেখি কাম জন্মিল তাহার।
ধরিতে তাহাকে বাহু করেন প্রসার॥
কি কর, কি কর বলি বিষহরি কয়।
আমি নন্দিনী তব ওহে দয়াময়॥
তখন ধ্যানেতে সব জানি পঞ্চানন।
সাজিতে কন্যারে লয়ে করিল গমন॥
কৈলাসে লইয়া গেল দেব শূল পাণি।
তথায় দেখিয়া তারে হরের গৃহিণী॥
পতির যুবতী ভার্য্যা করিয়া চিন্তন।
বাম চক্ষু নষ্ট তার করিল তখন॥
তাহা দেখে বিষাদাতে কহে শূলপাণি।
করিলে অন্যায় কাজ গুনগো ভবানি॥
আমার নন্দিনী এই বিষহরি হয়।
না বুঝিয়া অনুচিত করিলে নিশ্চয়॥
এত বলি মনসারে লইয়া তখন।
সিজুয়া পর্ব্বতে তিনি করেন গমন॥
বিশ^কর্মা দ্বারা তথা করি দিব্য ঘর।
মনসা দেবীরে তথা স্থাপিলেন হর
(মহাদেব)॥
তখন মনসা কহে শুন ভগবান।
একাকী কেমনে হেথা করিব যাপন॥
অনেক চিন্তিয়া তবে দেব শূলপাণি।
কপালের ঘর্ম মুছে হস্তেতে তখনি॥
এক কন্যা তাতে করে জনম ধারণ।
মনসার সখী রূপে রহে সর্বক্ষণ॥
কিসে নিজ পূজা হবে জগতে প্রচার।
এ চিন্তা মনসা তখন করে নিরন্তর॥

 

মনসার সহিত চাঁদের বিবাদ


অতঃপর মনসা দেবী ভাবিলেন সার।
চম্পক নগরে হবে পূজার প্রচার॥
জগাই জেলে করে তথাই বসতি।
নিছনী তাহার পত্নী পতিব্রতা সতী॥
তার করে (হাতে) পূজা নিতে করিয়া মনন।
যগ্মবারা তারে করে কৌশলে অর্পণ॥
গ্রামেতে স্থাপিয়া বারা অতি সমাদরে।
নিছনী মনসা পূজেষোড়শোপচারে॥
মনসার বরে তার ফিরিল কপাল।
হইল বিপুল ধন সুন্দর মহাল॥
সংবাদ পাইয়া সবে চম্পক নগরে।
সমাদরে মনসা পূজা করে ঘরে ঘরে॥
মনসার বরে সবে সুখী সে নগরে।
তাদের ভক্তিতে খুশি মনসা অন্তরে॥
সেই গ্রামে বাস করে চাঁদ সদাগর।
গন্ধবেণে জাতি সদা পূজেন শঙ্কর॥
সনকা তাহার পত্নী পিতব্রতা সতী।
কি কব তাহার রূপ যেন সয়ং রতি॥
মনসার প্রভাব যখন সনকা শুনিল।
মনসা পূজিতে মনে ভক্তি উপজিল॥
মনোহর স্থানে এক পুরীর ভিতর।
দুই বারা বানাইল পরম সুন্দর॥
বারা দেখি সুখী সনকা সাদরে।
মনসার পূজা করে নানা উপচারে॥
এ সংবাদ পেয়ে চাঁদ হয়ে ক্রোধান্বিত।
হেতাল (গদা) লইয়া হাতে তথা উপনীত॥
বারা ভাঙ্গি সনকারে বলিল আক্রোশে।
চেঙামুড়ি কাণি পূজ কাহার আদেশে॥
সনকা চাঁদেরে বলে দেখ নয়ন ভরে।
চম্পক নগরে সুখী কিসে সর্ব্ব নরে॥
মনসাদেবীকে পূজে যত সব লোক।
ধন-ধান্যে পরিপূর্ণ নাই কোন শোক॥
চাঁদ বলে মোরা পূজি সর্বদা শঙ্করে।
কিসের অভাব আছে মোদের সংসারে॥
আর না করিও কোন কথার উত্তর।
শীঘ্রগতি চলে যাও আপনার ঘর॥
অতিব দুঃখিত হয়ে সনকা তখন।
বিষাদে চলে যায় আপন ভবন॥
লখিন্দরের জন্ম
চাঁদের র্দুদশা ও গৃহে পুনরাগমন
ত্রিপদী
ক্রোধ ভরে সদাগর ফিরে আসে নিজ ঘর।
বিবাদ করি মনসার সনে॥
হেতাল লইয়া ফিরে দেখা যদি পায় তারে
পাঠাইবে যমের সদরন॥
চাঁদের আচার হেরি রুষ্ট হয়ে বিষহরি
সর্পগনে আদেশ করিল॥
পাইয়া আদেশ তার ত্রমে ছয় পুত্র তার।
দংশনেতে যম ঘর দিল॥
কঠিন চাঁদের মতি ফিরিল না তার গতি
মনসারে দ্বেষ করে অনুক্ষণ॥
কিছুদিন এইভাবে কাটিয়া যাইল যবে।
চাঁদ ভাবে বাণিজ্য কারণ॥
সপ্ততরী দ্রব্য ভরি শঙ্করের নাম স্মরি।
ডিঙ্গা ছাড়ি চলিল বাণিজ্য॥
তখন সনকা সতী পঞ্চমাস গর্ভবতী।
চাঁদ গেল জানি সবিশেষে॥
বাণিজ্যেতে গেল পতি দুঃখে দিন কাটায়
সতী।
ক্রমে তার গর্ভ পূর্ণ হয়॥
দশমাস দশদিনে শুভলগ্ন শুভক্ষণে।
সনকা প্রসবে এক তনয়॥
পাড়া পড়শি সংবাদ পেয়ে সত্ত্বর আসিল
ধেয়ে।
পুত্র দেখি সবে হয় খুশি॥
রূপে অতি মনোহর সর্ব্বচিত্ত মুগ্ধকর।
ভূতলে আসিল যেন শশী॥
হেথা চাঁদ সদাগরে মনসার কোঁপে পড়ে।
জলে ডুবে তার সপ্ততরী॥
হাবু-ডুবু খায় জলে প্রাণে মাত্র বাঁেচ
বেনে।
তীরে উঠে অতি কষ্ট করি॥
অতিশয় দীন বেশে বেড়াইয়া দেশে দেশে।
কোনক্রমে আসি নিজ ঘর॥
তনয়ের মুখ দেখি হইল পরম সুখী।
নাম তার রাখে লখিন্দর॥
দিনে দিনে শশীসম বাড়ে পুত্র নিরুপম।
অধিকারী হল সর্ব্বগুণে॥
চাঁদ ভাবে মনে মনে উপযুক্ত পাত্রী সনে।
পরিণয় দিবেন তনয়েরে॥
লখিন্দরের বিবাহ সর্পদংশনে মৃত্যু ও
পূণর্জীবন প্রাপ্তি
নিছনি গ্রামেতে বাস সায় সদাগর।
তার জাতি গন্ধবেনে স্বভাব সুন্দর॥
কুল-মান গুণ-শীল ধনবান অতি।
অমলা তাহার পত্নী পতিব্রতা সতী॥
তাহার গর্ভেতে জন্মে বেহুলা সুন্দরী।
সর্ব্ব সু লক্ষণা কন্যা রূপে বিদ্যাধারী॥
পুত্রের সুযোগ্য পাত্রী চাঁদ করি মনে।
বিবাহ সম্বন্ধ স্থির করে সেই স্থানে॥
শুভক্ষণে শুভলগ্নে পুত্রের বিবাহ।
মহা সমারোহে চাঁদ করিল সম্পন্ন॥
বাসরে পুত্রের মৃত্যু সর্পের দংশনে।
সে কথা চঁদের মনে জাগে সর্বক্ষণে॥
সে কারণে পুত্র পুত্রবধুকে লইয়া।
বিবাহের পরক্ষণে আসিল চলিয়া॥
দেশেতে নির্¤§াণ করি এক লৌহ ঘর।
রাত্রে বর কন্যা রাখে তাহার ভিতর॥
চাঁেদর অজ্ঞাতে ছিল ছিদ্র লৌহ ঘরে।
ছিদ্র আসি কালীনাগ দংশে লখিন্দরে॥
জাগিয়া বেহুলা উঠে করি হাহাকার।
সংবাদ পাইয়া সবে খোলে লৌহদ্বার॥
দ্বার খুলি দেখে পড়ি আছে লখিন্দরে।
বেহুলা বিলাপ করে পতি করি ক্রোড়ে॥
সনকা সংবাদ শুনে আসিল ধাইয়া।
অনেক ক্রন্দন করে ভূমিতে পড়িয়া॥
বহুরূপে সান্ত¡না দিল চাঁদ সদাগরে।
বিধির লিখন বল কে খন্ডাতে পারে॥
তারপর সৎকারের করে আয়োজন।
শ^শুর চরণে পড়ি বেহুলা তখন॥
কাঁদিয়া বলিল মোর শুন নিবেদন।
মান্দাসে পতিকে লয়ে করিব গমন॥
(কলা গাছের তৈরি ভেউরা)।
সুরলোকে যেয়ে আমি শিবের প্রাসাদে।
অবশ্য জিয়ার মোর পতি নির্বিবাদে॥
চাঁদ বলে একে তুমি কুলের কামিনী।
তাতে অতি রূপবতী যুবতী রমণী॥
কেমনে তোমাকে আমি দিব এ দশায়।
কুলের কলঙ্ক তাতে রাটবে সবাই॥
শুনিয়া বেহুলা কাঁদি করযোড়ে কয়।
অবশ্য জিয়াব পতি না কর সংশয়॥
আর যদি কোনক্রমে না কর স্বীকার।
অনশনে ত্যাজিব এ জীবন আমার॥
আজ্ঞা দিল চাঁদবেনে না দেখে উপায়।
বধুসহ লখিন্দরে মান্দাসে ভাসায়॥
গুরুজন পদ বন্দি বেহুলা সুন্দরী।
দেবীর প্রসাদে চলি যায় সুরপুরী॥
দেবের সভায় নৃত্য করিয়া বেহুলা।
সর্ব্ব দেবগণে তথা সন্তুষ্ট করিলা॥
বেহুলা প্রতিজ্ঞা করে দেবের সভায়।
মনসার পূজা করাইবে শ^শুর দ্বারায়॥
তুষ্ট হয়ে জিয়াইল দেবী লখিন্দরে।
আরও এনে দিল মৃত ছয়টি ভাসুরে॥
চৌদ্দ তরী দ্রব্য ভরি দিলেন বিদায়।
বেহুলা চরণ বন্দি উঠিলেন নায় নৌকায়)॥
দেবীর প্রসাদে তরী শীঘ্র লাগে ঘাটে।
পাড়া-পড়শী সংবাদ পেয়ে আসিল নিকটে॥
আশ্চর্য্য হয়ে সবে জয়ধ্বনি দিল।
পতœীসহ সুখে চাঁদ সবে ঘরে নিল॥
বেহুলা শ^শুর পদে করিল মিনতি।
তুষ্ট হয়ে চাঁদে করে মনসার স্তুতি॥


চাঁদ কর্তৃক মনসার পূজা


ত্রিপদী

তুষ্ট হয়ে বিষহরি আসি পুষ্প রথোপরি।
দয়া করি দিল দরশন॥
ভূমিতে লোটায়ে কয় ধরিয়া দেবীর পায়।
চাঁদ থাকে করিতে স্তবন॥
মনসার আজ্ঞা পেয়ে নানা উপচার দিয়ে।
দেবীর পূজা করে সদাগর।
পূজা হলে সমাপন দেবী হল অন্তর্দ্ধান।
চাঁদে দান করি ইষ্ট বর॥
চাঁপাপুরে ঘরে ঘরে মনসার পূজা করে।
ক্রমে পূজা ছাইল ভূবন (পৃথিবী)॥
এই পুঁিথ যেবা পড়ে সর্পভয় যায় দুরে।
ধনে-জনে বাড়ে অনুক্ষণ॥
শক্তিপদ অতি দীন কু-কর্ম্মেতে সদা লীন।
কি করিবে মাগো তব স্তুতি॥
তুমি অতি মহামতি দয়া করি দাস প্রতি।
শুদ্ধ কর তার মতিগতি॥
রাধাকৃষ্ঞ পদাম্বুজে মন যেন থাকে মজে।
কৃপা করি দেহ এই বর॥
পাঁচালী হইল শেষ সবে হয়ে প্রেমাবেশ।
বল জয় জয় শ্রীগৌরসুন্দর॥
সমাপ্ত

 

মৌলিক তথ্য

  • গানের ধরন: মনসা পাঁচালী, ব্রতকথা, মঙ্গলকাব্য

  • বিষয়: সর্পদেবী মনসার জন্ম ও মহিমা, চাঁদ সওদাগর ও বেহুলার উপাখ্যান

  • প্রচলিত ধারা: এটি একটি ঐতিহ্যবাহী লোকগীতি, যা শ্রাবণ মাসে মনসা পূজার সময় পরিবেশিত হয়।

  • অনুপ্রেরণা: পদ্মপুরাণ বা মনসামঙ্গল কাব্য।

 

শ্রীশ্রীমনসাদেবীর পাঁচালী: বেহুলা ও চাঁদ সওদাগরের মহাকাব্যিক গাথা

“শ্রীশ্রীমনসাদেবীর পাঁচালী ও ব্রতকথা” বাংলার লোকসংস্কৃতির এক অমূল্য সম্পদ। এটি নিছক একটি গান নয়, বরং এক সুবিস্তৃত আখ্যান, যা যুগ যুগ ধরে মানুষের মুখে মুখে চলে আসছে। এই পাঁচালীতে সর্পদেবী মনসার জন্মকথা থেকে শুরু করে তার মহিমা প্রচারের জন্য চাঁদ সওদাগরের সঙ্গে তার অহংকারপ্রসূত যুদ্ধের করুণ এবং বিস্ময়কর কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।

পাঁচালীর মূল উপজীব্য হলো দেবসমাজে স্বীকৃতি ও মর্ত্যলোকে পূজা লাভের জন্য দেবী মনসার দৃঢ় সংকল্প। কিন্তু তার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান শিবভক্ত বণিক চাঁদ সওদাগর। এই দুই ব্যক্তিত্বের সংঘাতের ফলস্বরূপ চাঁদ সওদাগরের ছয় পুত্রের মৃত্যু হয়। সবশেষে, বাসরঘরে সাপের ছোবলে প্রাণ হারান তার কনিষ্ঠ পুত্র লখিন্দর। কিন্তু এই ট্র্যাজেডির পর থেকেই কাহিনীর কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন বেহুলা, লখিন্দরের সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী।

বেহুলা তার অটল সতিত্ব ও অদম্য সাহসের জোরে মৃত স্বামীকে ভেলায় করে ভাসিয়ে নিয়ে যান দেবতাদের সভায়। সেখানে তার অলৌকিক নৃত্য ও প্রতিজ্ঞায় মুগ্ধ হয়ে দেবতারা লখিন্দরকে জীবন ফিরিয়ে দেন। এই পাঁচালীতে একদিকে যেমন দেবীর ক্রোধ ও অলৌকিক ক্ষমতা ফুটে উঠেছে, তেমনি অন্যদিকে বেহুলার ভালোবাসা, বিশ্বাস এবং হার না মানার মানসিকতাও উজ্জ্বলভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এটি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উপাখ্যান নয়, বরং মানব সম্পর্ক, বিশ্বাস এবং ঐশ্বরিক শক্তির এক গভীর রূপক। এই পাঁচালী আমাদের সমাজে আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক এবং লোকসাহিত্যের এক জীবন্ত উদাহরণ।

 

প্রশ্ন ও উত্তর

১. মনসা দেবী কে? মনসা হলেন সর্পদেবী, যিনি প্রধানত সর্পদংশন থেকে রক্ষা করেন। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ অনুসারে, তিনি কশ্যপ মুনির মানস থেকে সৃষ্ট হন। তিনি জরুৎকারু মুনির পত্নী, আস্তিক মুনির মাতা এবং নাগরাজ বাসুকির বোন। তাকে বিষহরি নামেও ডাকা হয়।

২. মনসা পাঁচালী বা ব্রতকথা কী? মনসা পাঁচালী বা ব্রতকথা হলো মনসা দেবীর পূজা উপলক্ষে পরিবেশিত এক ধরনের আখ্যানমূলক লোকগান। এতে দেবীর জন্ম, মহিমা এবং বেহুলা-লখিন্দরের উপাখ্যান বর্ণনা করা হয়। এটি সাধারণত সম্পূর্ণ রাত ধরে পালা আকারে গাওয়া হয়।

৩. চাঁদ সওদাগর কেন মনসার পূজা করতে অস্বীকার করেছিলেন? চাঁদ সওদাগর ছিলেন শিবের পরম ভক্ত। তিনি মনসাকে একজন নিম্নস্তরের দেবী মনে করতেন এবং তার অহংকারের কারণে মনসার পূজা করতে রাজি হননি। এই অহংকারের সংঘাতই মনসামঙ্গল কাব্যের মূল বিষয়।

৪. মনসা পূজার পাঁচটি অলৌকিক ফল কী কী? ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে, মনসা পূজা করলে পাঁচটি অলৌকিক ফল পাওয়া যায়: ১. বাস্তুদোষ দূর হয়। ২. পারিবারিক অশান্তির বিনাশ হয়। ৩. বন্ধ্যা নারীও সন্তানবতী হতে পারে। ৪. বাড়ির সবাই সুস্থ থাকে। ৫. সারা বছর সর্পভয় থাকে না।

৫. বেহুলা কিভাবে লখিন্দরকে বাঁচিয়েছিল? সাপে কাটা লখিন্দরকে ভেলায় করে নিয়ে বেহুলা স্বর্গের পথে যাত্রা করেছিলেন। সেখানে দেবতাদের সভায় তিনি তার নৃত্য পরিবেশন করে তাদের সন্তুষ্ট করেন এবং দেবীর কাছে তার স্বামীর জীবন ভিক্ষা চান। তার দৃঢ়তা ও ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে মনসা দেবী লখিন্দরকে জীবিত করে তোলেন।

৬. মনসা দেবীর ১২টি নাম কী কী? মনসা দেবীর ১২টি নাম হলো: জরৎকারু, জগৎগৌরী, মনসা, সিদ্ধযোগিনী, বৈষ্ণবী, নাগভগিনী, শৈবী, নাগেশ্বরী, জরৎকারুপ্রিয়া, আস্তীকমাতা, বিষহরী ও মহাজ্ঞানযুতা।

Share on

1 thought on “শ্রীশ্র্রীমনসাদেবীর পাঁচালী ও ব্র্র্রতকথা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *