নাম আমার কিশোর কুমার গাঙ্গুলী
সুরকার-শিবদাস চ্যাটার্জী
সঙ্গীত-অমিত কুমার
শিল্পী-কিশোর কুমার
ওরে হো ও ও ও ও ও ও ও
নাম আমার নাম আমার
কিশোর কুমার গাঙ্গুলী
রবি ঠাকুর যে ভাষাতে,
বলতো কথা তাই বলি।।
নাম আমার কিশোর কুমার গাঙ্গুলী
ওহে ব্যানার্জী নই মূখার্জী নই
চ্যাটার্জী নই গাঙ্গুলী।
নাম আমার কিশোর কুমার গাঙ্গুলী।
আহা গল্প হলেও সত্যি কথা
বলছি সবাই শোনো
রূপ কাহিনী রূপ কথা নয়
আজগুবি নয় কোনো
আমার গানের বন্ধুরা সব
মন দিয়ে আজ শোনো
ও ভাই মন দিয়ে আজ শোনো।
এক যে ছিল দুষ্ট ছেলে,
বেজায় রকম কালো;
কেবল লেখাপড়ায় অষ্টরম্ভা
মনটা ছিল ভালো
ও তার মনটা ছিল ভালো।
এমনিতে সে চালাক চতুর
মোটেই সে নয় বোকা;
আদর করে ডাকতো সবাই
গাইয়ে বাবু খোকা।
খান্ডুয়া বাসী বোম্বে বাজার
সেই ছেলেটার বাড়ি
তাড়ির দোকান গাঁজা গুদাম
সামনে ছিল তারি।
পালিয়ে যেত খেলার মাঠে
যেথায় সারা বেলা;
বন্ধুরা সব জুটতো এসে
খেলতো নানা খেলা।
কন তো সে পোলাটা ক্যাডা ?
ওটা আমিগো আমি;
ব্যানার্জী নয় মূখার্জী নয়
চ্যাটার্জী নয় গাঙ্গুজ্বী
নাম আমার কিশোর কুমার গাঙ্গুলী
আমি বোম্বেবাসী আজ প্রবাসী
তবু খাঁটি বাঙ্গালী;
নাম আমার
কিশোর কুমার গাঙ্গুলী হা।
হলো আমার বাবা ছিলেন
রাসভারী লোক,
বি এ বি এল কুঞ্জলাল;
উঠলে রেগে যেতেন খেপে
মুখটা যে তার হতো লাল।
বাবা ছিলেন পেশায় উকিল
নেশায় যে তার ছিল গান।
বন্ধুরা সব আসত যেত
বাবার ছিল দরাজ প্রাণ।
(বাবার খুব শখ ছিল,
উকিল বন্ধুদের বাড়িতে
ডেকে এনে,আসর বসাতেন।
আর সেই আসরে ঘুম থেকে টেনে
তুলে আমাকে বলতেন-
খোকা,ওরে খোকা !
শুনিয়ে দে সকলকে
অশোক আর দেবি দার
ওই গানটা তাড়াতাড়ি।
আর আমি ?
সেই আসরে গান শুনিয়ে
পেয়েছিলাম কত সম্মান,
কত ক্যাশ,কত কড়ি !
তখন আমি কি গান
গাইতুম জানেন ?)
মেঁ বান কি চিড়িয়া
বান কে বান বান বোলু রে;
মেঁ বান কো পানছি বান কে
তাং তাং ডোলু রে এ এ এ
দিয়া জা লাউ
জাগা মাগা জাগা মাগা
দিয়া জা লাউ
জাগা মাগা জাগা মাগা
জাগা মাগা জাগা মাগা
জাগ মাগ জাগা মাগা
দিয়া জা লাউ
হায় হায় হায় হায়
নিশিতে যাইও ফুল বনে
নিশিতে যাইও ফুলবনে রে ভ্রমরা
নিশিতে যাইও ফুলবনে।
ও লালা ধিং লালা ও লালা ধিং
দাদামনির গান শুনিয়ে
পেতাম একটি টাকা;
শচীন কর্তার ভাটিয়ালী গেয়ে
পেতাম আড়াই টাকা।
চুক্তি ছিল সায়গল সাহেবের
গানে পাঁচটি টাকা।
সবার যিনি অশোক কুমার
আমার দাদামণি;
তার কাছেতেই হাতে খড়ি
আমার পরশমনি;
আমার দিদিমণির গানের গলা
মিষ্টি ছিল ভারী;
দিদি আমার গানের গুরু
শিষ্য আমি তারি।
এমনি করে রঙে রসে
ভরে ছিল দিনগুলি
ছোটবেলার কিশোর এখন
কিশোর কুমার-
হারিয়েছে গাঙ্গুলী।
বুঝলেন না বুঝাচ্ছি !
(আমি গায়ক হলাম,
খুব নাম হলো,
আমি অভিনেতা হলাম,
আরো নাম হলো
আরে গায়ের নিকল
তাক নহী বাহার
পূজা কার উস ঔর
আপকী যব তেরে জুতে
খোল মে আপনা
সড়ক সমঝতি হ্যায়
মাগার টুটো উস ঔর
আপকি পূজা কার আয়ে
জিসকে জুতে তুঝে
খোলনে পড়তী হ্যায়
হঠাৎ হঠাৎ আমার
জীবনের আকাশে
উঠল ঝড় ঝড় না ঝড় না
কর আয়কর আয়কর
আমায় করল দেশান্তর
সংসারে সঙ হয়ে থাকা
লাগলোনা পছন্দ;
অবশেষে হয়ে গেলাম
স্বামী কিশোরানন্দ।
জয় গোবিন্দাম জয় গোপালাম
জয় গোবিন্দাম জয় গোপালাম।
পিছে পার গেয়া ইনকাম টেক্সাম
পিছে পার গয়া ইনকাম টেক্সাম।
এ এ তারপর অনেক কিছুই ঘটলো
কিছু পেলাম কিছু দিলাম
কিছু হারালাম
স্মৃতি নামের রেলগাড়িটা
পেছন দিকে ছোটে
আমার মনের পর্দাতে সব
ছবি হয়ে উঠে;
বেশ তো ছিলাম ছোট বেলায়
মায়ের আঁচল তল;
সেই কথাটি ভেবে এখন
ভাসি চোখের জলে,
শিশু ঘুমোল পাড়া জুরোল
বরগী এলো দেশে
গানের সুরে ঘুম পাড়াতো
মা যে ভালোবেসে।
ঘুম পাড়ানী ছড়ায় এখন
খোকন ঘুমোয় না;
তারার দেশে হারিয়ে গেছে
স্নেহময়ী মা।